১। কোনো ব্যক্তি তাঁর উপকারীর উপকার করেছেন এমন কোনো ঘটনা তোমার জানা থাকলে তা লিখ।
👉 আমাদের পাড়ার এক কাকু গুরুতর অসুস্থ হলে তাঁর প্রতিবেশী তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে জীবন বাঁচিয়েছিলেন। কয়েক বছর পর সেই প্রতিবেশীর ছেলে পড়াশোনার খরচ জোগাতে সমস্যায় পড়ে। তখন কাকু তাঁর নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সেই খরচ বহন করেন। এভাবেই তিনি তাঁর উপকারীর উপকার করেছেন।
২। উপকারীর উপকার না করে অপকার করেছে; এরকম একটি ঘটনার বিবরণ দাও।
👉 একবার এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে চাকরি পেতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু চাকরি পাওয়ার পর সে কৃতজ্ঞ না হয়ে উল্টো তার সহকর্মীদের কাছে তাকে ছোট করার চেষ্টা করে। এতে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।
১। খলিফা মামুন কোথাকার শাসনকর্তা ছিলেন?
ক. বাগদাদ ✅
খ. ডেমাস্কাস
গ. সিরিয়া
ঘ. ইরান
উদ্দীপক:
সে বিস্ময়াবহ কাহিনি শুনিয়া নৃপতি মুগ্ধ হইলেন। বহুদিনের বিদ্বেষভাব দূরে গেল, ভক্তিতে অন্তর আর্দ্র হইল। প্রেমের জয় হইল। নৃপতির কণ্ঠে হাতেমের জয়গান। তাঁহার কণ্ঠ ভেদিয়া উত্থিত হইল- ধন্য হাতেম, ধন্য তাহার কুল!
২। নৃপতির মাধ্যমে ‘প্রত্যুপকার’ গল্পের খলিফার কোন বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেয়েছে?
ক. বদান্যতা
খ. মহানুভবতা ✅
গ. দানশীলতা
ঘ. ঔচিত্যবোধ
উদ্দীপক:
চুরির অভিযোগে কিছুলোক জনৈক ব্যক্তিকে চেয়ারম্যানের ইউনিয়ন পরিষদে হাজির করল। ঘটনাক্রমে আমজাদ জানতে পারলেন, বন্দি ব্যক্তি আর কেউ নয়, সে দশ বছর আগে আমজাদের সন্তানকে সড়ক দুর্ঘটনা থেকে বাঁচিয়েছিল। কিন্তু আমজাদ নিজের ক্ষতি হবে ভেবে না চেনার ভান করে চুপ করে রইল।
ক। ‘প্রত্যুপকার’ শব্দের অর্থ কী?
👉 উপকারীর উপকার করা।
খ। খলিফা মামুন কিছুক্ষণ মৌন হয়ে ছিলেন কেন?
👉 আলী ইবনে আব্বাসের আবেদনের সত্যতা যাচাই ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিনি কিছুক্ষণ নীরবে চিন্তা করেছিলেন।
গ। উদ্দীপকের বন্দির ঘটনা প্রত্যুপকার গল্পের কোন ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা কর।
👉 উদ্দীপকের ঘটনাটি আমাদের সরাসরি ‘প্রত্যুপকার’ গল্পের মূল ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। গল্পে দেখা যায়, আলী ইবনে আব্বাস খলিফার নির্দেশে এক বন্দিকে নিজের গৃহে রুদ্ধ করে রাখেন। পরে আলী ইবনে আব্বাস জানতে পারেন, এই বন্দিই একসময় ডেমাস্কাস নগরে তাঁর প্রাণরক্ষা করেছিলেন। আশ্রয় দিয়ে তাঁকে নিরাপদে রেখেছিলেন এবং অশ্ব, খাদ্যসামগ্রী ও ভৃত্য দিয়ে স্বদেশে ফিরে যেতে সাহায্য করেছিলেন। সেই দয়ালু ও উদার আশ্রয়দাতাই আজ বন্দি হয়ে খলিফার কোপে পতিত হয়েছেন। তখন আলী ইবনে আব্বাস নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও খলিফার কাছে প্রার্থনা করেন, যেন তাঁর উপকারীর প্রাণ রক্ষা হয়। অবশেষে খলিফা মামুন সেই বন্দিকে ক্ষমা করে মুক্তি দেন।
ঠিক একইভাবে, উদ্দীপকের ঘটনাতেও আমজাদ জানতে পারে যে তার গৃহে বন্দি হয়ে আসা ব্যক্তি-ই বহু বছর আগে তার সন্তানকে সড়ক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করেছিল এবং সেবা-শুশ্রূষা করেছিল। দুই ঘটনার মধ্যেই একটি মিল লক্ষ্য করা যায়—উভয় ক্ষেত্রে বন্দি ব্যক্তি একসময় উপকার করেছে। পার্থক্য হলো, আলী ইবনে আব্বাস উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রাণরক্ষার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন, অথচ আমজাদ নিজের ক্ষতির আশঙ্কায় চুপ করে থাকে।
অতএব, উদ্দীপকের ঘটনা ‘প্রত্যুপকার’ গল্পের সেই অংশকে স্মরণ করিয়ে দেয় যেখানে উপকারীর উপকার করার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, এবং মানবিকতা, কৃতজ্ঞতা ও নৈতিক সাহসের গুরুত্ব প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘ। ‘আমজাদ ও আলী ইবনে আব্বাস উভয়ই বন্দি কর্তৃক উপকৃত হলেও এরা একরকম নয়’- বিশ্লেষণ কর।
👉 আলী ইবনে আব্বাস ও আমজাদ উভয়ই জীবনের সংকটে কোনো না কোনো বন্দির সাহায্য পেয়ে ছিলেন। তবে তাদের প্রতিক্রিয়া, নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং কৃতজ্ঞতার মাত্রায় তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
আলী ইবনে আব্বাসের কাহিনী দেখায়, তিনি জীবনের জন্য ঝুঁকি নিলেও তার উপকারীর প্রতি দায়বদ্ধ ছিলেন। যখন খলিফা মামুনের নির্দেশে আলীকে সেই ব্যক্তিকে আটকাতে বলা হয়, তিনি অত্যন্ত সাবধানে আচরণ করেন। আলী মনে রাখেন যে, এই ব্যক্তি একসময় তার প্রাণরক্ষা করেছেন। ফলে তিনি শুধু নিজের স্বার্থে কাজ করেননি, বরং উপকারীর প্রতি সহানুভূতিশীল ও দায়বদ্ধ থেকেছেন। শেষ পর্যন্ত আলী যথাযথভাবে উপকারীকে খলিফার ক্রোধ থেকে রক্ষা করেন, তাকে স্বাধীনতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করেন, এমনকি খলিফার সম্ভাব্য রোষের মুখেও। এখানে আলীর চরিত্রে কৃতজ্ঞতা, নৈতিক দায়িত্ব, মানবিক মূল্যবোধ এবং বুদ্ধিমত্তার সমন্বয় দেখা যায়। তিনি নিজের উপকারীর প্রতি শুদ্ধ ন্যায়পরায়ণ ও পরোপকারী মনোভাব প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে, আমজাদ উপকার লাভ করলেও তার আচরণ আলীর মতো নয়। তিনি স্বার্থপরভাবে নিজেকে রক্ষা করার জন্য চুপ থাকেন, কৃতজ্ঞতা বা সহায়তার কোনো প্রমাণ দেখান না। তার মধ্যে নৈতিক দায়িত্ববোধের অভাব স্পষ্ট। উপকার প্রাপ্ত হওয়ার পরও তিনি উপকারীর প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা অনুভব করেন না। এটি তার অকৃতজ্ঞতার প্রকাশ।